Advertisements


সাইক্লোন “মোখা” আপডেট, সতর্কতা ও করণীয় !

সাইক্লোন “মোখা” আপডেট, সতর্কতা ও করণীয়

সাইক্লোন তথা ঘূর্নিঝড় একটি সুপরিচিত ট্রপিকাল বা ক্রান্তীয় দূর্যোগ যা সাধারণত ৩০ ডিগ্রী উত্তর থেকে ৩০ ডিগ্রী দক্ষিণ সীমায় ঘটে থাকে। এটি যদিও প্রাণীকুলের জন্য ক্ষতিকর তবুও পৃথিবীর তাপীয় ভারসাম্য রক্ষার জন্য খুবই জরুরী একটি ঘটনা। এটি না ঘটলে পৃথিবী একটা তাপীয় বোম্ব এ পরিণত হত। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় “মোখা” তৈরি হওয়া না হওয়া নিয়ে ব্যাপক কনফিউশন তৈরি হয়েছে, এর ল্যান্ডফল/ভূমিতে আছড়ে পড়ার স্থান নিয়েও তৈরি হয়েছে যথেষ্ট কন্ট্রোভার্শিয়াল আলোচনা। এইজন্য একটি সাইক্লোন এর গঠন এর জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান সমুহের আলোচনা ও মোখা এর সাথে এর রিলেশন ব্যাখা করবো আজকের এই আর্টিকেলটিতে।

আমেরিকান GFS মডেল
ইউরোপিয়ান ECMWF মডেল

সাইক্লোন তৈরি হওয়ার কারণ সমুহঃ


মূলত সাগরে কোন স্থানে নিম্নচাপ তৈরি হলে সেখানে আশেপাশে হতে প্রচুর বাতাস এসে জড়ো হয় যা ময়েশ্চার তথা জলীয়বাস্প নিয়ে আসে। এই জলীয়বাস্প উপরে উঠে মেঘমালা তৈরি করে। ময়েশ্চারের পরিমান অনেক বেশী হলে এবং অন্যান্য প্যারামিটার গুলো অনুকুল থাকলে তা থেকেই সাইক্লোন তৈরি হয়।

বিভিন্ন গবেষনা থেকে দেখা যায় যে ঘূর্নিঝড় গঠনের জন্য মোট ছয়টি প্যারামিটার/ভ্যারিএবলস এর প্রয়োজন হয়। যার মধ্যে তিনটি ডায়নামিক (গতিবিদ্যা সম্পর্কিত) এবং তিনটি থার্মোডায়নামিক (তাপগতিবিদ্যা সম্পর্কিত)। নিচে এগুলা আলোচনা করা হল।

(ক) ডায়নামিক প্যারামিটার

১। রিলেটিভ ভর্টিসিটি (তুলনামুলক ঘূর্ণি)ঃ বঙ্গোপসাগরে সাধারণত পূর্ব দিক থেকে আসা এবং পশ্চিম দিক থেকে আসা বাতাসের ইন্টার‍্যাকশনের ফলে এই ঘূর্ণি তথা ভর্টিসিটি তৈরি হয়। কেলভিন ওয়েভ ও রসভি ওয়েভই মূলত এই পূবালি এবং পশ্চিমা বায়ু প্রবাহের জন্য দায়ী।
এই মূহুর্তে বঙ্গোপসাগরে রসভি ও কেলভিন ওয়েভ এর বেশ ভালো একটা ইন্টারেকশন দেখা যাচ্ছে এবং বায়ুমন্ডলের উপরের স্তরে ঘূর্ণি (ভর্টিসিটি) তৈরি হয়ে গেছে। যা বায়ুমন্ডলের নিচের দিকে নামতে আরো দুএকদিন সময় লাগবে। যার ফলে লঘুচাপ তৈরি হবে। এই ঘূর্ণি যদি প্রতি সেকেণ্ডে ০.০০০০০১ এর বেশী হয় তবে তা সাইক্লোন তৈরি করতে পারে। বর্তমানে এই ধরনের ঘূর্নি তৈরি হয়েছে।

850MB Relative Vorticity, CIMSS

২। বায়ু শিয়ার (উইন্ড শিয়ার)ঃ আচ্ছা মনে করুন আপনি একটা যায়গায় দাঁড়িয়ে একটা কাজ করার চেষ্টা করছেন। আপনার পা এবং মাথা দড়ি দিয়ে বাঁধা। আপনি আরো মনে করুন পূর্ব দিক থেকে আপনার পায়ের দড়ি ধরে কেউ টানছে আর পশ্চিম দিক থেকে মাথার দড়ি ধরে টানছে অন্য কেউ। পশ্চিম দিকের লোক যদি বেশি বেগে টানে তাহলে কি হবে? আপনি দড়ির টানে পুবের তুলনায় পশ্চিমে যেতে শুরু করবেন। এমতাবস্থায় ঐ স্থানে অবস্থান করে আপনি কি কাজ করতে পারবেন? উত্তরঃ না।

বায়ু শিয়ার অনেকটা এরকম। মানে একদিকের বায়ুর তুলনায় অন্য দিকে বেশি জোড়ে বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে। উত্তরা বাতাস এবং দক্ষিণা বাতাসের প্রবাহের এরকম কম-বেশি হয় যা মেরিডোনিয়াল শিয়ার নামে পরিচিত এবং পূর্ব-পশ্চিমা বাতাসের প্রবাহেও এরকমটা ঘটে যা জোনাল শিয়ার নামে পরিচিত। এই উভয় প্রকারের শিয়ারের সমন্বয়ে যে রেজাল্ট পাওয়া যায় তাকে আমরা বলি শিয়ারের লব্ধ মান (শিয়ার ম্যাগনিচিউড)। তো এই শিয়ার করবে কি, কোথাও কোন ঘূর্ণি হইতে চাইলে তাকে সেখান থেকে মেঘের সঞ্চালন সরানোর চেষ্টা করবে। তার মানে আমরা বুঝলাম যে, শিয়ার বেশি হলে ঘূর্ণি সুগঠিত হতে পারবেনা, কম হতে পারে। শিয়ারের মান খুব কম হলে (প্রতি ঘন্টায় ৫ থেকে ১৫ নটিকাল মাইল বা এর কম)  তা ঘূর্ণি তৈরির অনূকুলে প্রভাব ফেলতে পারে। বর্তমানে শিয়ারের মান খুবই কম, যা ঘূর্ণি তৈরির বার্তা দিচ্ছে।

Wind Shear (kt) , Meteosat 9, CIMSS

৩। কোরিওলিস ফোর্স (ঘূর্ননজনিত বল)ঃ এই ধরনের ফোর্স পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারনে তৈরি হয়। এবং তা কোন অঞ্চলে সাধারণত নির্দিষ্ট। এই ফোর্স সাইক্লোন এর ঘূর্ণিকে প্রভাবিত করে। উত্তর গোলার্ধে তা সাইক্লোনের ঘূর্ণিকে ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে ঘুরতে বাধ্য করে। বিষুবরেখায় এই ফোর্সের প্রভাব শূন্য থাকায় সাইক্লোন সৃষ্টির অন্যান্য সকল বৈশিষ্ট্য উপস্থিত থাকলেও সাইক্লোন সৃষ্টি হতে পারেনা। ৫ ডিগ্রী থেকে ৩০ ডিগ্রী উত্তরে/দক্ষিণে ( বিষুব রেখার বেশ কিছুটা উত্তর বা দক্ষিণ। এখানে ১ ডিগ্রী দৈর্ঘ্যকে প্রায় ১১১ কিমি ধরুন) সাইক্লোন উৎপন্ন হয়। তবে সাধারণত ১০ থেকে ২০ ডিগ্রী উত্তর দক্ষিণে বেশি সাইক্লোন উৎপন্ন হতে দেখা যায়। আমরা যে জায়গায় “মোখা” সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করছি তা ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রী উত্তরের মধ্যে।

coriolis force, earthhow

(খ) থার্মোডায়নামিক প্যারামিটার

১। সমুদ্রের তাপীয় শক্তিঃ  সমুদ্রের তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর বেশি হলে সেখানে সাইক্লোন তৈরি হওয়ার মত যথেষ্ট শক্তি তৈরি হয়। তবে শুধু এই তাপমাত্রা হলেই হবেনা, পানির নিচে কমপক্ষে ৫০ মিটার পর্যন্ত এই তাপমাত্রা বজায় থাকতে হবে। এই অবস্থায় প্রচুর তাপীয় শক্তি সমুদ্রে তৈরি অবস্থায় থাকে যা সাইক্লোনের সাহায্যেই রিলিজ হতে চায়।  এই তাপমাত্রায় প্রচুর পানি জলীয়বাস্পে পরিণত হতে পারে যা সাইক্লোন তৈরি করতে সাহায্য করে। বর্তমানে যে এলাকায় আমরা সাইক্লোন তৈরির আশঙ্কা করছি সেখানকার তাপমাত্রা ৩০-৩১ ডিগ্রী সেলসিয়াসের আশেপাশে। আর সমুদ্রের এই তাপীয় শক্তিকে ট্রপিকাল সাইক্লোন হিট পটেনশিয়াল বলে। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের মধ্য ও দক্ষিন অংশে এর মান মান প্রতি বর্গ সেন্টিমিটার জায়গায় ১০০-১২০ কিলোজুল এবং কোনো কোন স্থানে এর মান  প্রতি বর্গ সেন্টিমিটার জায়গায় ১৪০-১৫০ কিলোজুল পর্যন্ত যা হিউজ। এবং পানির নিচে কোথাও কোথাও ১৫০ মিটার গভীর পর্যন্ত ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা খুজে পাওয়া যাচ্ছে। সুতরাং এই পরিমান শক্তি রিলিজ হওয়া সময়ের দাবি।

SST, Tropical Tidbits
TCHP, NOAA/PhOD Ocean Observations

২। জলীয় বাষ্পের / আর্দ্রতার অস্থিতিশীলতা (ইনস্টাবিলিটি)ঃ এই ধরণের অস্থিতিশীলতা সাইক্লোন তৈরির পূর্বশর্ত। কনভেক্টিভ এভেইলেবল পটেনশিয়াল এনার্জি বা কেপ এই অস্থিতিশীলতা তৈরি করে। তবে কনভেক্টিভ ইনহাইবিশন (সিআইএন-CIN) নামক আরেকটি প্যারামিটার এটাকে বাধা দেয়। CIN এর মান প্রতি কেজিতে ৫০ জুল এর বেশী হলেই তা জলীয় বাষ্প হওয়ার হার কমিয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরিতে বাধা দেয়। এই সময়ের CIN ভ্যালু সমুদ্রে কম হলেও, কেপ ভ্যালু স্থানে স্থানে প্রায় প্রতি কেজিতে ৪০০০ জুল পর্যন্ত। সুতরাং সাইক্লোন তৈরি হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। 

CAPE, Meteoblue

৩। আপেক্ষিক আদ্রতা (রিলেটিভ হিউমিডিটি)ঃ ৪.৫ /৫ কিলোমিটার পর্যন্ত আপেক্ষিক আর্দ্রতার মান অনেক বেশি হলেই সাইক্লোন তৈরি হতে পারে। গবেষণা থেকে দেখা যায় সাগরে এর মান ৬৫% এর আশে পাশে হলেই তা সাইক্লোন ঘটানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে এর মান ৭০ থেকে ৯৫% পর্যন্ত উঠানামা করছে এবং সময়ের সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে যা সাইক্লোন ফরমেশন এর একটি উল্লেখযোগ্য অবস্থা নির্দেশ করছে।

ECMWF Current Relative Humidity, Tropical Tidbits

সাইক্লোনের গতিপথে অন্যান্য প্রভাবঃ

১। ফুজিয়ারা ইফেক্টঃ যদি দুটি সাইক্লোনিক ঘূর্ণি কাছাকাছি থাকে তবে তার একটি আরেকটিকে প্রভাবিত করতে পারে অথবা দুটি মিলে একটি সাইক্লোন তৈরি হতে পারে। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে এমন দুটি ঘূর্ণিবাত্যা দেখা যাচ্ছে।

২। সাবট্রপিকাল রিজঃ সাবট্রপিকাল রিজ গতিপথকে নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থাৎ সাইক্লোন চলার পথের স্টিয়ারিং থাকে এই রিজের হাতে। যদি ভারতীয় রিজ এবং পূর্ব দিকের রিজ এর প্রভাব আশানুরুপ হয় তবে মোখা সাইক্লোন প্রায় সোজাসোজি বাংলাদেশ পর্যন্ত আসতে পারে। যা উত্তর বঙ্গোপসাগরে এসে উত্তর উত্তর পূর্ব বা উত্তর পূর্ব দিকে বাক নিতে পারে।

৩। সাবট্রপিকাল জেট স্ট্রিমঃ এটা বায়ুমন্ডলের উপরের স্তরে চলমান একটি অতিমাত্রার বায়ুপ্রবাহ। এটির প্রভাবে সাধারণত ঝড় পুর্ব দিকে বাক নিতে পারে। মূলত রিজ এবং জেট এই দুটি ঘূর্ণিঝড় এর গতিপথকে নিয়ন্ত্রণ করে।

৪। ভুমিকম্পঃ সাইক্লোন ফরমেশনের স্থানে মারাত্মক ভূমিকম্প এর গতিপথকে বদলে দিতে পারে। তবে বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে এমন কোন ভূমিকম্প সংঘটিত হয়নি যা এর গতিপথ বদলাতে পারে। পত্রিকায় যে খবরটি দেখেছেন তা কেবল অতিরঞ্জিত নয় বরং একটি ভুল প্রোপাগান্ডা। আমরা এই রিপোর্টকে অস্বীকার করছি।

৫। MJO: এটি একটি পূর্বমুখী রেইনবেল্ট। অর্থাৎ এটি বৃষ্টিপাতের একটি উৎসকে পশ্চিম থেকে পূর্বে নিয়ে যায়।  এটি যদি ফেজ ৫-৭ তথা পূর্ব মেরিটাইম দ্বীপপুঞ্জের পূর্ব পার্শে ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থান করে এবং এর প্রশস্ততার মান যদি বেশী হয় তবে তা সাইক্লোনের গতিপথে  বেশ ভালো ভুমিকা রাখতে পারে। বর্তমানে এটি এই অবস্থানেই এবং ইন্ডেক্স প্রায় ১.৫ , যা বেশ প্রভাব রাখতে পারে।

৬। ওয়েস্টার্ণ ডিস্টার্বেন্সঃ এটিও ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে বর্তমান সিস্টেমের উপর এর প্রভাব কম থাকতে পারে।

ECMWF 200HPA, Windy

সাইক্লোন মোখাঃ

সৃষ্টির সম্ভাবনাঃ এতক্ষণের আলোচনায় দেখা যায় যে সাইক্লোন “মোখা” তৈরির স্থানে সকল প্যারামিটার স্বমহিমায় উপস্থিত। প্রায় ১৫০ মিটার গভীর পর্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রার উপস্থিতি,অধিক মানের আপেক্ষিক আর্দ্রতা, উচ্চ কনভেক্টিভ এভেইলেবল পটেনশিয়াল এনার্জি, পর্যাপ্ত ঘূর্ণি মান, নিম্ন বায়ু শিয়ার , এবং ফর্মেশন অবস্থান সব মিলিয়ে একটি সিস্টেম তৈরির নিশ্চয়তা ৯৯% হয়ে গেছে।  অর্থাৎ ৮/৯ তারিখের দিকে ঘূর্ণিঝড় এর প্রাথমিক অবস্থা তৈরি হচ্ছে এটা মোটামোটি নিশ্চিত। অলরেডি ফরমেশন অঞ্চল দুটিতে (২টি ভর্টেক্স) মেঘের আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। একটা পূর্ব পাশে এবং অন্যটি পশ্চিম পাশে। এই দুটির মিলিত প্রভাবে সম্ভাব্য স্থান তৈরি হবে।  ফরমেশন এর স্থান এর উপর ভিত্তি করে এর শক্তি ও উপকূলে আঘাতের স্থান ও সময় নির্ধারিত হবে। এ সম্পর্কে আমাদের এই ভিডিও টি দেখতে পারেন।

সম্ভাব্য ল্যান্ডফল এরিয়া ও তীব্রতাঃ সাইক্লোন পূর্ব দিকের সাবট্রপিকাল রিজ (STR) এবং ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্বেন্স (WD) এর প্রভাবে এর গতিপথ পরিবর্তন এর উপর নির্ভরশীল। এইসব প্যারামিটার বিশ্লেষনে দেখা যায় মোখা
১।  14-15 মে 2023 এর মধ্যে একটি বেশ শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসাবে ওডিশা থেকে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ উপকূলের মধ্যে আঘাত করতে পারে (এটা অতি সাধারণ পূর্বাভাস যা পরিবর্তিত হতে পারে।) ।
২। যদি পূর্ব দিকের STR-এর প্রভাব দুর্বল হয়ে যায় তবে সাইক্লোনটি অত বেশি শক্তিশালী না হয়ে আগেই মায়ানমারে আঘাত হানতে পারে।

তাই সম্পূর্ন অবস্থা এখন মেটেওরোলজিকাল ঘটনাসমুহের উপরে নির্ভর করছে। ই.সি.এম.ডব্লিউ.এফ এর অনেক মেম্বারের এভারেজ রান এটিকে উড়িষ্যা থেকে দক্ষিন পূর্ব বাংলাদেশ এর দিকে এর গতিপথ নির্দেশ করছে, অনেকে মায়ানমারে। যদিও BWOT এর মাল্টি -রিজিওন ফরমেশন  পুর্বাভাস জানাচ্ছে বাংলাদেশ ও নিকটতম মায়ানমার উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাব্যতা প্রায় 60%, উড়িষ্যা/WEST BENGAL উপকূলের জন্য 30% এবং অন্য কোথাও 10%। আমরা আশা করি লঘুচাপ/নিম্নচাপ এলাকা গঠনের পরে একটি পরিষ্কার দৃশ্য আপনাদের জন্য উপস্থাপন করতে পারবো।

BWOT Tropical Development Graphic

বাংলাদেশে মোখার প্রভাব: ঝড় বাংলাদেশে আঘাত করলে, এর প্রভাবে শক্তিশালী ঝড়সহ  ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে এবং কোথাও কোথাও অত্যন্ত ভারী বর্ষণ হতে পারে। উত্তর ও মধ্য বঙ্গোপসাগরের আবহাওয়া খুবই দূর্যোগপূর্ন থাকতে পারে। উড়িষ্যা/পশ্চিমবঙ্গে আঘাত করলেও যথেষ্ট বৃষ্টিপাত ও ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী স্থানে অনেক ঝড় হতে পারে। কিন্তু মায়ানমারে আঘাত করলে সব প্রভাবই কম থাকতে পারে।

সতর্কতা ও করণীয়ঃ আমাদের এই পূ্র্বাভাসটি খুবই সাধারন পূর্বাভাস যা ল্যান্ডফল এর স্থানকে ১০০% নিশ্চিত করছেনা। তাই এই আপডেটের উপর ভিত্তি করে সতর্কতা অবলম্বন করার পরিবর্তে বড় সিদ্ধান্ত নিবেন না। আমরা পাবলিক সেন্টিমেন্ট জুড়ে আতঙ্ক ছড়ানোর পরিবর্তে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে চাই। সুতরাং সতর্ক থাকুন, নিরাপদে থাকুন।

খালিদ হোসেন
প্রধান আবহাওয়া গবেষক, বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (BWOT)
শিক্ষার্থী ও আবহাওয়া বিষয়ক গবেষক, BUET

Advertisements


Advertisements